বিড়ালের ভ্যাকসিন: কেন প্রয়োজন এবং কখন দেবেন?

বিড়ালের কিছু মারাত্মক রোগ আছে যা মানুষের মধ্যেও সংক্রমিত হতে পারে। এর মধ্যে কিছুরোগ যেমন-rabies বা জলাতঙ্ক মানুষের মধ্যে সংক্রামিত হলে মানুষ মারাও যেতে পারে। তাই পোষা বিড়াল এবং মানুষ উভয়ের সুরক্ষার জন্য Vaccine প্রয়োজন। 


বিড়ালের বয়স ২ থেকে ৩ মাস হলেই vaccine দেওয়ার নিয়ম। তবে ৪ মাস বয়সেও ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ দেওয়া যায়। প্রথম বার vaccine দেওয়ার ১ বছর (টিকাভেদে মেয়াদ কম বেশি হতে পারে) পর পর বুস্টার ডোজ দিতে হয়। 


আপনার বিড়ালের বয়স যদি ৪ মাসের বেশি হয় তবে টিকা দেওয়া যাবে কিনা জানতে ভ্যাটেনারি ডাক্তারের পরামর্শ নিন। 

আসুন তাহলে বিড়ালের ভ্যাকসিন সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই।

বিড়ালের ভ্যাকসিনের তালিকাসমূহ

বিড়ালদের রোগ প্রতিরোধ করার জন্য অনেক ধরনের ভ্যাকসিন রয়েছে, বর্তমানে আমাদের দেশে ৪ টি ভ্যাকসিন বেশি দেওয়া হয়ে থাকে।


১. NOBIVAC® Feline 1-HCPCh

২. RABISIN®

৩. CaniShot RV-K®

৪. QUADRICAT®


 1. Nobivac® Feline 1-HCPCh


Nobivac vaccine বিড়ালকে ৪টি ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়াজনিত প্রাণনাশক রোগ থেকে সুরক্ষিত রাখে। এই vaccine বাংলাদেশে সহজলভ্য এবং বিড়ালের জন্য খুবই উপকারী। এই ভ্যাকসিন ৯ সপ্তাহ বয়স বা তার থেকে বেশি বয়সি বিড়াল কে দেয়া হয়। Nobivac® Feline 1-HCPCh সাধারণত প্রতি বছর একবার বুস্টার ডোজ হিসেবে দেওয়া হয়। এই ভ্যাকসিন যেসব রোগ প্রতিরোধ করে।


  • Feline Calicivirus (FCV) (cat flu /বিড়ালের জ্বর),

  • Feline Rhinotracheitis (নিউমোনিয়া এবং ইনফ্লুয়েঞ্জা),

  • Feline panleukopenia (FPV).

  • Feline – Chlamydophila.


 2. RABISIN®


জলাতঙ্ক বিড়ালের একটি মারাত্মক এবং প্রানঘাতী সংক্রামক রোগ। Rabisin vaccine বিড়ালকে জলাতঙ্ক (rabies) রোগ থেকে রক্ষা করে। এটি ৩বছর, ১বছর, ৬মাস বিভিন্ন মেয়াদী হয়ে থাকে।


 3. Quadricat®


Quadricat vaccine বিড়ালকে calicivirus , rhinotracheitis, panleukopenia এবং rabies থেকে রক্ষা করে। এই ভ্যাকসিনটি ৩ মাস বয়সে দেয়া যায়। Quadricat® সাধারণত প্রতি বছর একবার দেওয়া হয়।

কোথায় Vaccine দেওয়া হয়?

বিড়ালের ভ্যাকসিন সাধারণত পশু চিকিৎসকের কাছে পাওয়া যায়। বাংলাদেশের বেশিরভাগ পশু চিকিৎসকই ভ্যাকসিন দেন। আপনার পরিচিত কোন বিড়ালের মালিকের কাছে জিজ্ঞাসা করে আপনার নিকটস্থ চিকিৎসকের ঠিকানা খুঁজে পেতে পারেন।


আপনাদের সুবিধার জন্য কিছু VET হাসপাতালের নাম ও ঠিকানা নিচে উল্লেখ করা হলঃ 


  • MR Veterinary Clinic

ঠিকানা: 126/6 Patwari Goli Chowrasta, Dhaka 1214

ফোন: 01521-489206


  • Dhaka Pet Clinic

ঠিকানা: 11/2 Abhay Das Lane, Tikatuli, Dhaka-1203 ১১, ২ Abhay Das Ln, Dhaka 1203

ফোন: 01825-921868


  • Pet Cure Point & Orthopaedics Center

ঠিকানা: 741, Block- A Comilla Hotel Mor, Dhaka 1219

ফোন: 01725-808534


  • Biswas Veterinary Clinic

ঠিকানা: TA – 131, 109 Gulshan Badda Link Rd, Dhaka 1212

ফোন: 01322-581020

ভ্যাকসিনের দাম

বিড়ালের ভ্যাকসিনের দাম বিভিন্ন কারণের উপর নির্ভর করে, যেমন ভ্যাকসিনের ধরন, চিকিৎসকের অবস্থান এবং চিকিৎসকদের চার্জ। 

বিড়ালের ভ্যাকসিনের মূল্য তালিকাঃ

ক্রমিক নং

ভ্যাকসিনের নাম

দামসমূহ

Nobivac

১০০০-১৫০০ টাকা

Rabisin

৩০০-৫০০ টাকা

Quadricat

১০০০-১৫০০ টাকা

বিড়ালের ভ্যাকসিন কখন দিতে হবে?

ক্রমিক নং

বিড়ালের বয়স

ডোজ

৪-৬ সপ্তাহ

১ম ডোজ

১০-১২ সপ্তাহ

২য় ডোজ

১৪-১৬ সপ্তাহ

৩য় ডোজ

প্রতি বছর

১টি করে টিকা দিতে হবে।

বিড়ালের ভ্যাকসিন কেন দিতে হয়?

বিড়ালের ভ্যাকসিন দেওয়া হয় যাতে বিড়ালগুলি মারাত্মক রোগ থেকে রক্ষা পায়। এই রোগগুলির মধ্যে রয়েছে:


  • র‍্যাবিস: এটি একটি ভাইরাল সংক্রমণ যা মানুষের মধ্যেও মারাত্মক হতে পারে।

  • ভ্যাক্সিনিয়া: এটি একটি ভাইরাল সংক্রমণ যা ফোস্কা এবং চুলকানি সৃষ্টি করে।

  • প্যারাসিটোমোসিস: এটি একটি পরজীবী সংক্রমণ যা রক্তস্বল্পতা এবং মৃত্যুর কারণ হতে পারে।

  • হেপাটাইটিস: এটি একটি ভাইরাল সংক্রমণ যা লিভারের ক্ষতি করতে পারে।

  • ক্লামাইডিয়া: এটি একটি ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ যা প্রজনন সমস্যার কারণ হতে পারে।


বিড়ালকে এই রোগগুলি থেকে রক্ষা করার জন্য, তাদের ছোটবেলা থেকেই নিয়মিত ভ্যাকসিন দেওয়া উচিত। ভ্যাকসিন দেওয়ার ফলে বিড়ালের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয় যা তাদের সংক্রমিত হওয়া থেকে রক্ষা করে।


এছাড়া মনে রাখা প্রয়োজন:


  • বিড়ালের ভ্যাকসিনগুলি সাধারণত ইনজেকশন আকারে দেওয়া হয়।

  • বিড়ালের ভ্যাকসিনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াগুলি সাধারণত হালকা এবং স্বল্পস্থায়ী হয়।

  • আপনার বিড়ালকে ভ্যাকসিন দেওয়ার আগে আপনার পশু চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করা উচিত।

বিড়ালের ভ্যাকসিনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াগুলি কী কী?

বিড়ালের ভ্যাকসিনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াগুলি সাধারণত হালকা এবং স্বল্পস্থায়ী হয়। যদি আপনার বিড়ালের মধ্যে কোনও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করেন তবে আপনি কী করতে হবে তা জেনে রাখা ভালো।


সাধারণ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া


  • জ্বর: আপনার বিড়ালটিকে কিছুটা দুর্বল বা ক্লান্ত দেখাতে পারে। জ্বর সাধারণত কয়েক ঘন্টা পরে চলে যায়।


  • বমি এবং ডায়রিয়া: আপনার বিড়ালটি কয়েক ঘন্টার জন্য কিছু খেতে নাও চাইতে পারে। যদি লক্ষণগুলি কয়েক দিনের বেশি স্থায়ী হয় তবে আপনার পশু চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করুন।


  • ইনজেকশন সাইটের প্রতিক্রিয়া: ইনজেকশন সাইটে ব্যথা, লালভাব এবং ফোলাভাব হতে পারে। এই প্রতিক্রিয়াগুলি সাধারণত কয়েক দিনের মধ্যে চলে যায়।


গুরুতর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া


  • অ্যানাফিল্যাক্সিস: এটি একটি গুরুতর প্রতিক্রিয়া যা শ্বাসকষ্ট, শক এবং এমনকি মৃত্যুর কারণ হতে পারে। অ্যানাফিল্যাক্সিসের লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে:


  • ত্বকের ফোলাভাব, বিশেষ করে মুখ এবং গলায়

  • শ্বাসকষ্ট

  • বুকে ব্যথা

  • বমি এবং ডায়রিয়া

  • দ্রুত হৃদস্পন্দন

  • মাথা ঘোরা

যদি আপনার বিড়ালের মধ্যে অ্যানাফিল্যাক্সিসের কোনও লক্ষণ দেখা যায় তবে অবিলম্বে আপনার পশু চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করুন।সংক্রমিত

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Change

Main Menu